Home About-us Privacy Policy Contact-us Services

জেনে নিন হজ ওমরাহ পালনের নিয়ম

ad+1

যে ব্যক্তির এই পরিমাণ ধন-সম্পদ
আছে যে, সে হজের সফর (পথখরচ) বহন
করতে সক্ষম এবং তার
অনুপস্থিতিকালীন তার
পরিবারবর্গের প্রয়োজন মেটানোর
মতো খরচও রেখে যেতে সক্ষম, এমন
ব্যক্তির ওপর হজ করা ফরজ। অথবা এমন
ব্যক্তি যে হজের মৌসুমে অর্থাত্
শাওয়াল মাস শুরু
হওয়া থেকে সৌদি আরবে অবস্থানরত
ছিল বা জিলহজ মাস পর্যস্ত
সৌদি আরবে অবস্থান
করতে থাকে এবং তার ওপর
যদি কোনো বিধিনিষেধ, ওজর ও
অসুবিধা না থাকে, তাহলে তারও
হজ পালন করা ফরজ।
হজের প্রকার : হজ তিন প্রকার, যথা—
এক. হজে ইফরাদ : অর্থাত্ হজের সফর
শুরু করার সময় মিকাত থেকে যদি শুধু
হজের নিয়তে ইহরাম
বাঁধে এবং হজের সঙ্গে ওমরাহ
আদায় না করে, তাহলে এ প্রকার
হজকে ‘হজে ইফরাদ’ বলা হয়। এ প্রকার
হজ পালনকারীকে ‘মুফরিদ’ বলে।
দুই. হজে কিরান : যদি একইসঙ্গে হজ
এবং ওমরাহর নিয়ত করে উভয়টিই
পালন করে এবং হজ ও ওমরাহর জন্য একই
ইহরাম বাঁধে, তাহলে এ ধরনের
হজকে ‘হজে কিরান’ বলা হয়। এ
প্রকার হজ পালনকারীকে ‘কারিন’
বলে।
তিন. হজে তামাত্তু : অর্থাত্ হজের
সঙ্গে ওমরাহকে এভাবে মেলানো যে ‘মিকাত’
থেকে শুধু ওমরাহর ইহরাম বাঁধা। এই
ইহরামে মক্কায় পৌঁছে ওমরাহ
পালনের পর ইহরাম ভেঙে ৮ জিলহজ
সেখান থেকেই হজের ইহরাম
বেঁধে হজ পালন
করাকে ‘হজে তামাত্তু’ বলে। এ
প্রকারের হজ
পালনকারীকে ‘মুতামাত্তি’ বলে।
ইহরাম বাঁধার নিয়ম : হজ ও ওমরাহর
আমলগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম আমল
হলো ইহরাম বাঁধা। ইহরাম বাঁধার
নিয়ম হলো—হজ অথবা ওমরাহর
নিয়তে সেলাইকৃত কাপড়
খুলে সেলাইবিহীন দুটি চাদর
পরিধান করে ‘তালবিয়া’ পাঠ করা।
শরিয়তের পরিভাষায় একেই ‘ইহরাম’
বলা হয়। ইহরাম বাঁধার উত্তম
পদ্ধতি হলো যখন ইহরাম বাঁধার
ইচ্ছা করবে, তখন প্রথমে গোসল
অথবা অজু করবে, নখ কাটবে, বগল ও
নাভির নিচের চুল পরিষ্কার
করবে এবং মাথা ও
দাড়ি চিরুনি করে সব
বিষয়ে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করবে।
ইহরামের জন্য দুটি নতুন
অথবা ধোলাই করা পরিষ্কার চাদর
হওয়া সুন্নত। একটি চাদর
দিয়ে লুঙ্গি বানাবে;
অন্যটি দিয়ে চাদর বানাবে।
ইহরামের কাপড় পরিধান করার পর
নামাজের মাকরুহ সময়
না হলে মাথা ঢেকে দু’রাকয়াত
নফল নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব।
নামাজ পড়ে মাথার কাপড়
খুলে ফেলবে এবং যে হজের
ইচ্ছা করবে, মনে মনে সেই হজের
নিয়ত করে ইহরামের ‘তালবিয়া’
পাঠ করবে।
মাসনুন তালবিয়ার উচ্চারণ :
লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক
লাব্বাইকা লাশারিকালাকা লাব্বাইক
ইন্নাল
হামদা ওয়াননিয়ামাতা লাকা ওয়াল
মূলক লাশারিকালাক।
ওমরাহ আদায়ের পদ্ধতি :
মক্কা মোকাররমায় আসার পর ওমরাহ
আদায় করতে হবে।
সুতরাং মসজিদে হারামে প্রবেশ
করার পর তাহিয়াতুল মসজিদের
দু’রাকয়াত নফল নামাজ পড়বে না।
কারণ এ মসজিদের ‘তাহিয়াহ’
হলো তাওয়াফ। এজন্য দোয়া করার
পর ওমরাহর তাওয়াফ করবে।
যদি কোনো কারণে তাওয়াফ
করা সম্ভব না হয় এবং নামাজের
মাকরুহ সময়ও না হয়,
তাহলে তাওয়াফের
পরিবর্তে তাহিয়াতুল মসজিদের
দু’রাকয়াত নফল নামাজ পড়ে নেবে।
তাওয়াফ : অতঃপর তাওয়াফ করার
উদ্দেশ্যে হাজরে আসওয়াতের
দিকে এগুতে হবে এবং সেখানে পৌঁছে ইহরামের
পরিহিত চাদরকে ডান বগলের নিচ
দিয়ে বের করে চাদরের উভয়
পাশকে সামনে-পিছে করে বাম
কাঁধে ছেড়ে দেবে এবং ডান কাঁধ
খোলা রাখবে। শরিয়তের
পরিভাষায় এ কাজকে ‘ইজতিবা’
বলে।
অতঃপর তাওয়াফের নিয়ত
করবে এবং হাজরে আসওয়াতের
সামনে এসে উভয় হাত কান পর্যন্ত
উঠিয়ে হাতের
তালুদ্বয়কে হাজরে আসওয়াতের
দিকে করে নিম্নের দোয়া পাঠ
করতে হবে।
দোয়া পাঠের পর উভয় হাত
ছেড়ে দেবে। অতঃপর ‘ইসতিলাম’
করবে অর্থাত্ উভয়
হাতকে হাজরে আসওয়াতের ওপর
এমনভাবে রাখবে যেভাবে সিজদার
সময় রাখা হয় এবং উভয় হাতের
মাঝে মুখ
রেখে আস্তে করে হাজরে আসওয়াতে চুমু
খাবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন
হাজরে আসওয়াতে খুশবু
লাগানো না হয়। আর ইসতিলাম
করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন
অন্যের বা নিজের কোনো কষ্ট
না হয়।
ইসতিলাম
করতে গিয়ে যদি নিজের
বা অন্যের কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়,
তাহলে ইসতিলাম করবে না;
বরং ইসতিলামের ইশারা করবে।
অর্থাত্ উভয়
হাতকে এভাবে উঠাবে যে, উভয়
হাতের পিঠ স্বীয় চেহারার
দিকে থাকবে এবং উভয় হাতের
তালু হাজরে আসওয়াতের
দিকে এমনভাবে রাখবে যেন
মনে হয় যে, উভয় হাত
হাজরে আসওয়াতের ওপরই
রাখা হয়েছে। এসময়
ওপরে উল্লিখিত দোয়া পাঠ করবে।
আর উভয় হাতকে চুমু দেবে।
অতঃপর তালবিয়া পাঠ বন্ধ
করে ডানদিকে ফিরে তাওয়াফ শুরু
করবে। তাওয়াফকালীন ছোট ছোট
পায়ে বীরের মতো হেলে-দুলে দ্রুত
হাঁটবে। তবে দৌড়াদৌড়ি-
লাফালাফি থেকে বিরত থাকবে।
এ ধরনের হাঁটাকে ‘রমল’ বলে। এই
তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে হাত
ওঠানো ছাড়া মনের চাহিদামত
যে কোনো দোয়া বা জিকির পাঠ
করা সুন্নত। উল্লেখ্য, তাওয়াফের
মধ্যে নির্দিষ্ট কোনো দোয়া পাঠ
করা আবশ্যক নয়। বরং মনের
চাহিদামত
যে কোনো দোয়া বা জিকির পাঠ
করলেই হবে।
বায়তুল্লাহর তৃতীয়
কিনারাকে ‘রুকনে ইয়ামানি’
বলে। রুকনে ইয়ামানির ওপর উভয়
হাত, পা অথবা শুধু ডান হাত ও
পা রেখে অতিক্রম করে যাবে।
অতঃপর হাজরে আসওয়াতের
সামনে এসে হাজরে আসওয়াতকে চুমু
খাবে অথবা ইশারা করবে।
এভাবে তাওয়াফের একটি চক্কর
সম্পন্ন করবে। এরপর ‘রমলে’র
সঙ্গে আরও দু’চক্কর সম্পন্ন করার পর
পরবর্তী চারটি চক্করে স্বাভাবিক
গতিতে তাওয়াফ
করবে এবং প্রতি চক্করের পর
হাজরে আসওয়াতকে চুম্বন
করবে অথবা চুম্বন করার
ইশারা করবে। যখন তাওয়াফ শেষ
হয়ে যাবে, তখন ‘ইজতিবা’ অর্থাত্
তাওয়াফের জন্য পরিহিত চাদরের
আদল পরিবর্তন করে আগের ন্যায়
চাদরকে উভয় পাশে রেখে দেবে।
মুলতাজিম : তাওয়াফের সাত চক্কর
সম্পন্ন
করে মুলতাজিমে আসবে (হাজরে আসওয়াত
ও খানায়ে কাবার দরজার
মধ্যবর্তী দেয়ালকে মুলতাজিম
বলে)। মুলতাজিমে আসার পর
মুলতাজিম স্পর্শ করে দোয়া করবে।
তাওয়াফের ওয়াজিব নামাজ :
মুলতাজিমে দোয়া শেষ
করে মাকামে ইবরাহিমে এসে এভাবে দাঁড়াবে যেন
নিজের দাঁড়ানোর অবস্থান ও
খানায়ে কাবার
মধ্যবর্তী স্থানে মাকামে ইবরাহিম
এসে যায়। অতঃপর যদি নামাজের
মাকরুহ ওয়াক্ত না হয়,
তাহলে তাওয়াফের দু’রাকয়াত
ওয়াজিব নামাজ আদায় করবে। আর
মাকরুহ ওয়াক্ত হলে তা অতিবাহিত
হওয়ার পর আদায় করে নেবে।
যদি নামাজিদের স্থান সঙ্কুলান
না হয়, তাহলে হারাম শরিফের
যেখানেই স্থান পাওয়া যায়,
সেখানেই ওই নামাজ আদায়
করে নেবে। অতঃপর জমজম কূপের
কাছে গিয়ে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে তিন
শ্বাসে পেট ভরে জমজমের
পানি পান করবে; কিছু
পানি নিজের শরীরের ওপর
ছিটিয়ে দেবে এবং বেশি বেশি দোয়া পাঠ
করবে।
সায়ী করার পদ্ধতি : জমজমের
পানি পান করার পর পুনরায়
হাজরে আসওয়াতের
সামনে এসে কালোপট্টির ওপর
দাঁড়িয়ে হাজরে আসওয়াতকে চুম্বন
অথবা চুম্বনের
ইশারা করে সায়ী করার
উদ্দেশ্যে সাফা পাহাড়ের
দিকে অগ্রসর হবে।
সাফা পাহাড়ে আরোহণ করার পর
কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে হাত
না উঠিয়ে সায়ী করার নিয়ত
করবে। অতঃপর দোয়া করার জন্য উভয়
হাত কাঁধ পর্যন্ত
উঠিয়ে বেশি করে দোয়া করবে।
সাফা থেকে নেমে ধীরে-
সুস্থে মারওয়া পাহাড়ের
দিকে রওনা করবে এবং জিকির ও
দোয়াতে মশগুল থাকবে। সবুজ
পিলার পর্যন্ত পৌঁছার পর আনুমানিক
ছয় হাত দূরত্ব বাকি থাকতে মধ্যম
পর্যায়ের দৌড় শুরু
করবে এবং দ্বিতীয় সবুজ পিলার
অতিক্রম করে ছয় হাত
দূরত্বে যাওয়ার পর দৌড় বন্ধ করবে।
অতঃপর
মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছে বায়তুল্লাহর
দিকে মুখ করে সামান্য
ডানদিকে সরে গিয়ে এমন
জায়গায় দাঁড়াবে যাতে অন্যের
আসা-যাওয়ার
ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা না হয়
এবং দোয়া পড়তে থাকবে।
এভাবে সায়ীর এক চক্কর সম্পন্ন
হওয়ার পর একইভাবে আরও ছয় চক্কর
সম্পন্ন করবে।
মারওয়া থেকে সাফা পর্যন্ত
গিয়ে দু’চক্কর সম্পন্ন
হয়ে যাবে এবং সাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত
তিন চক্কর সম্পন্ন হয়ে যাবে। সর্বশেষ
সপ্তম চক্কর
মারওয়া পাহাড়ে গিয়ে শেষ হবে।
সায়ী শেষ হওয়ার পর যদি মাকরুহ
ওয়াক্ত না হয়, তাহলে ‘মাতাফের’
কিনারায়
অথবা হাজরে আসওয়াতের
সামনে বা মসজিদে হারামের
যেখানেই সম্ভব হয়, সেখানেই
দু’রাকয়াত নফল নামাজ পড়ে নেবে।
সায়ী-পরবর্তী এই দু’রাকয়াত নফল
নামাজ পড়া মুস্তাহাব।
মাথার চুল মুণ্ডানো বা ছাঁটা :
সায়ী সম্পন্ন হওয়ার পর
নিজে বা অন্যকে দিয়ে মাথার চুল
মুণ্ডাবে। চুল যদি লম্বা হয়,
তাহলে চুল ছোট
করে ছেঁটে ফেলবে।
তবে মাথা মুণ্ডানোই উত্তম। মাথার
চুল মুণ্ডানো বা কাটার পর ইহরাম
ছেড়ে হালাল হয়ে যাবে।
এভাবে ওমরাহ পালন সম্পন্ন হবে।
হজ আদায়ের পদ্ধতি
হজের প্রথম দিন ৮ জিলহজ : ৮ জিলহজ
থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত
দিনগুলোকে ‘আইয়্যামে হজ’ বলা হয়।
এ দিনগুলোর মধ্যে ইসলামের
একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন আদায় করা হয়। ৭
জিলহজের মাগরিবের পর থেকে ৮
জিলহজের রাত শুরু হয়ে যায়।
রাতে ইহরামের নিয়তে গোসল
করে সেলাইকৃত কাপড়
খুলে ইহরামের চাদর পরিধান করবে।
অতঃপর পুরুষ হাজীরা হারাম
শরিফে আসবে এবং তাওয়াফ করবে।
মুস্তাহাব তাওয়াফের দু’রাকয়াত
নামাজ আদায় করার পর ইহরামের
নিয়তে দু’রাকয়াত নফল নামাজ
আদায় করবে। যদি তাওয়াফ করার
শক্তি না থাকে অথবা সাহস না হয়,
তাহলে শুধু ইহরামের
নিয়তে মাথা ঢেকে দু’রাকয়াত
নফল নামাজ আদায় করবে।
যদি মাকরুহ ওয়াক্ত হয়,
তাহলে নামাজ ছাড়াই হজের
নিয়ত করবে। অতঃপর হজের
উদ্দেশ্যে ইহরামের নিয়তে মধ্যম
আওয়াজে তিনবার ‘তালবিয়া’
পাঠ করবে।
মিনার দিকে যাত্রা :
তালবিয়া পাঠের পর হজের ইহরাম
বাঁধা অবস্থায়
মক্কা মোকাররমা থেকে ৮
জিলহজের সূর্য উদয় হওয়ার পর মিনার
দিকে যাত্রা শুরু করবে। এসময় অধিক
পরিমাণে তালবিয়া পাঠ
করবে এবং দোয়া পড়বে। মিনায়
জোহর, আছর এবং ৯ জিলহজের
মাগরিব, ইশা ও ফজরের নামাজ—এই
মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ
পড়া মুস্তাহাব এবং রাতে মিনায়
অবস্থান করা সুন্নত।
হজের দ্বিতীয় দিন ৯ জিলহজ
আরাফার দিকে যাত্রা : ফজরের
নামাজ মিনায় আদায়
করে তাকবিরে তাশরিক
এবং তালবিয়া পাঠ করে আরাফার
দিকে ধীরে-সুস্থে যাত্রা শুরু
করবে। রাস্তায় জিকির,
ইস্তিগফার, দুরুদ শরিফ ও দোয়া পাঠ
করবে এবং অধিক
পরিমাণে তালবিয়া পাঠ করবে।
আরাফার ময়দানে (উকুফে আরাফাহ)
অবস্থানের সময় হলো ‘যাওয়াল’
অর্থাত্ সূর্য ঢলে পড়ার পর
থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত। এজন্য
যাওয়ালের পর থেকেই অবস্থান শুরু
করবে। উকুফের নিয়ত করে দোয়ার
জন্য হাত প্রসারিত করে বিনয় ও
নম্রতার সঙ্গে তালবিয়া পাঠ
করবে। অতঃপর রোনাজারির
মাধ্যমে তওবা ইস্তিগফার
করবে এবং নিজের সব গোনাহ
মাফের জন্য অন্তর
থেকে দোয়া করবে। এভাবে সূর্য
অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত খুশুখুজুর
সঙ্গে জিকির ও দোয়ার মধ্যে মশগুল
থাকবে।
মুজদালিফায় যাত্রা : আরাফার
ময়দানে সূর্য অস্ত যাওয়ার পর
সেখানে অথবা রাস্তায় মাগরিব ও
ইশার নামাজ না পড়ে মুজদালিফায়
পৌঁছে মাগরিব ও ইশার নামাজ
একসঙ্গে আদায় করবে। পথে অধিক
পরিমাণে দুরুদ শরিফ, আল্লাহর
জিকির ও তালবিয়া পাঠ
করতে থাকবে। মুজদালিফায়
পৌঁছে মাগরিব ও ইশা দু’ওয়াক্তের
নামাজ ইশার
ওয়াক্তে একইসঙ্গে আদায় করবে।
উভয় নামাজের জন্য এক আজান
এবং এক ইকামত বলবে।
নামাজের পদ্ধতি : মুজদালিফার
পৌঁছার পর ইশার নামাজের সময়
হলে প্রথমে আজান
দেবে এবং ইকামত বলার পর নামাজ
আদায়ের নিয়তে জামাতের
সঙ্গে মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ
নামাজ আদায় করবে। অতঃপর
সালাম
ফিরিয়ে তাকবিরে তাশরিক
এবং তালবিয়া পাঠ করবে। এরপর
ইকামত ব্যতীত তত্ক্ষণাত্
কোনোপ্রকার
দেরি না করে জামাতের
সঙ্গে ইশার চার রাকাত ফরজ
নামাজ আদায় করবে এবং সালাম
ফিরিয়ে তাকবিরে তাশরিক
এবং তালবিয়া পাঠ করবে। অতঃপর
মাগরিবের দু’রাকাত সুন্নত
এবং ইশার দু’রাকাত সুন্নত ও তিন
রাকাত বিতর নামাজ আদায় করবে।
নামাজ থেকে ফারেগ হওয়ার পর
বাকি সারারাত আল্লাহর জিকির
ও ইবাদতে মশগুল থাকবে। তবে অল্প
সময় বিশ্রাম ও আরাম করবে।
কঙ্কর কুড়ানো : শয়তানকে মারার
জন্য মুজদালিফা থেকে রাতেই
কঙ্কর সংগ্রহ করা উত্তম। কিন্তু
যদি এই কঙ্কর অন্য কোনো স্থান
থেকে সংগ্রহ করা হয়,
তবে তাতে কোনো অসুবিধা হবে না।
উকুফে মুজদালিফা (মুজদালিফায়
অবস্থান) : যখন সুবহে সাদিক
হয়ে যাবে, তখন অন্ধকারের মধ্যেই
আজান দেবে এবং ফজরের সুন্নত
নামাজ পড়ে ফজরের ফরজ নামাজ
জামাতের সঙ্গে আদায় করবে।
সুবহে সাদিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই
মুজদালিফায় অবস্থান শুরু হয়ে যায়।
মুজদালিফায় অবস্থান
করা ওয়াজিব। উকুফে মুজদালিফার
সময় হলো সুবহে সাদিক
থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত। অতএব ফজরের
নামাজ আদায়ের পর থেকে জিকির
ও দোয়ায় মশগুল
থাকবে এবং সূর্যোদয়ের
পূর্বক্ষণে মুজদালিফা থেকে মিনায়
যাত্রা শুরু করবে। এর
চেয়ে দেরি করে মিনার
দিকে যাত্রা করা সুন্নতের
খেলাফ।
মিনায় প্রত্যাবর্তন :
মুজদালিফা থেকে মিনায় ফেরার
পথে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় মন-
প্রাণ দিয়ে আল্লাহর
দিকে মনোনিবেশ ও একাগ্র হবে।
এভাবে পথ চলে মিনায় পৌঁছবে।
হজের তৃতীয় দিন ১০ জিলহজ
জামরায়ে আকাবায় রমি করা :
মিনায় পৌঁছার পর সর্বপ্রথম
‘জামরায়ে আকাবায়’ কঙ্কর
নিক্ষেপ করবে। কঙ্কর নিক্ষেপের
পদ্ধতি হলো—ডান হাতের বৃদ্ধ ও
শাহাদাত আঙুল দিয়ে একটি কঙ্কর
ধরে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু
আকবার’ বলে জামরার পিলারের
গোড়ার দিকে কঙ্কর নিক্ষেপ
করবে। পিলারের গোড়ার কিছু
ওপরে নিক্ষিপ্ত হলেও
কোনো ক্ষতি নেই। এতদসত্ত্বেও এর
আশপাশে গোড়ার দিকে কঙ্কর
নিক্ষেপ করা জরুরি।
এভাবে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ
করতে হবে।
কোরবানি : জামরাতুল আকাবায়
কঙ্কর নিক্ষেপের পর
কোরবানি করবে। জিলহজের ১০
তারিখেই কোরবানি করা উত্তম;
তবে ১০ থেকে ১২ জিলহজের
সূর্যাস্ত পর্যন্ত রাত বা দিনের
যে কোনো সময়
কোরবানি করা যাবে।
হলক ও কসর (মাথা মুণ্ডানো ও চুল
কাটা) : কোরবানি থেকে ফারেগ
হওয়ার পর পুরুষ হাজীরা তাদের
মাথা মুণ্ডাবে কিংবা মাথার চুল
ছোট করে ছেঁটে ফেলবে।
মাথা মুণ্ডানোকে ‘হলক’ এবং চুল
ছোট করে কাটাকে ‘কসর’ বলে।
হলক বা কসর করার পর ইহরামের
পূর্ববর্তী কানুনগুলো পালন শেষ
হয়ে যাবে, অর্থাত্ হালাল
হয়ে যাবে।
তবে ‘তাওয়াফে জিয়ারত’
করা পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস
করা হালাল হবে না।
তাওয়াফে জিয়ারত : রমি,
কোরবানি এবং মাথার চুল
মুণ্ডানো বা ছাঁটার পর
তাওয়াফে জিয়ারত করবে।
তাওয়াফে জিয়ারতের পর
সায়ী করবে; অর্থাত্ সাফা ও
মারওয়া পাহাড়ের
মধ্যবর্তী স্থানে সাতবার
দৌড়াবে।
তাওয়াফে জিয়ারতের গুরুত্ব : স্মরণ
রাখতে হবে যে,
তাওয়াফে জিয়ারত হজের রুকন
বা ফরজ। কোনো অবস্থাতেই
তাওয়াফে জিয়ারত
ছাড়া যাবে না এবং তাওয়াফে জিয়ারতের
পরিবর্তে এর বদলা করাও যাবে না;
বরং শেষ জীবন পর্যন্ত
তাওয়াফে জিয়ারত ফরজ হিসেবেই
থেকে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত
তাওয়াফে জিয়ারত আদায়
করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীর
সঙ্গে সহবাস করা হারাম
থেকে যাবে।
সুতরাং যে কোনো অবস্থায়
তাওয়াফে জিয়ারত সম্পন্ন করেই
দেশে ফিরতে হবে। এ
ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ও সজাগ
থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই
যেন তাওয়াফে জিয়ারত
ছুটে না যায়।
হজের চতুর্থ দিন ১১ জিলহজ : ১১
জিলহজ জাওয়ালের পর তিন
জামরাতেই সাতটি করে কঙ্কর
নিক্ষেপ করবে। অর্থাত্
প্রথমে জামরায়ে উলাতে সাতটি কঙ্কর,
অতঃপর জামরায়ে উস্তায়
সাতটি কঙ্কর এবং সর্বশেষ
জামরায়ে আকাবায় সাতটি কঙ্কর
নিক্ষেপ করবে।
হজের পঞ্চম দিন ১২ জিলহজ : ১২
জিলহজের দিন বিশেষ কাজ
হলো জাওয়ালের পর তিন
জামরাতে ১১ তারিখের ন্যায়
সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
এদিন রমি করার পর
ইচ্ছা হলে মিনায়
থাকবে বা মক্কায় ফিরেও
আসতে পারবে। যদি মক্কায়
ফিরে আসার ইচ্ছা করে,
তাহলে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগেই
মিনার সীমানা থেকে বের
হয়ে যাবে। এভাবেই পবিত্র হজ
সম্পন্ন হবে।
মিনা থেকে ফেরার পর যতদিন
মক্কায় অবস্থান করবে, ততদিনের এই
অবস্থানকে গনিমত ও মূল্যবান
মনে করতে হবে এবং যতটুকু সম্ভব
তাওয়াফ, নামাজ, রোজা, দান-
খয়রাত এবং জিকির ও
তিলাওয়াতে নিজেকে মশগুল
রাখবে। এছাড়া অন্যান্য নেক কাজ
ও আমল বেশি বেশি করে পালন
করতে থাকবে।
হজ থেকে প্রত্যাবর্তন
এবং তাওয়াফে বিদা : হজ সম্পন্ন
হওয়ার পর যখন মক্কা থেকে নিজ
দেশে ফেরার ইচ্ছা করবে, তখন
বিদায়ী তাওয়াফ করতে হবে।
এটাও ওয়াজিব। বিদায়ী তাওয়াফ
নফল তাওয়াফের মতোই।
বিদায়ী তাওয়াফ থেকে ফারেগ
হয়ে মুলতাজিমে এসে খুব
বেশি করে দোয়া পড়বে, জমজমের
পানি পান করবে এবং পেরেশান ও
আফসোসের সঙ্গে পবিত্র
মক্কা থেকে দেশের
পথে রওনা হবে। এভাবেই ইসলামের
একটি অন্যতম রুকন পবিত্র হজের দীর্ঘ
সফর ও আমলের
মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে।
হজ্জ ও উমরাহের সময় সহজ কিছু
দোয়া সমূহ
(১) নিয়ত বাঁধার পর পড়ুনঃ
• লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক,
লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক,
ইন্নাল হামদা ওয়ান
নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা-
শারিকা লাক।
(২) ইহরামের
নামাযেরপরহাততুলেদোয়াকরুনএবংপড়ুনঃ
• আল্লাহুম্মাগ ফিরতুকা আওছাউ
মিন জুনুবী ওয়া রাহমাতুকা,
আরজা ইন্দি মিন আমালী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ,তুমার
ক্ষমা আমার গুনাহের চেয়ে অত্যন্ত
প্রশস্ত এবং আমার আমলের
চেয়ে তোমার রহমতের
প্রতি আমি অধিক আশ্বস্ত।
হে আল্লাহ আমি তুমার
কাছে তওবা করছি, আমি গুনাহের
দিকে কখনও ফিরে যাবনা।
(৩) এহরামের নিয়তঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নি উরীদুল
উমরাতা ফাইয়াছ ছিরহা লী,
ওয়া তাকাব্বালহা মিন্নি।
অর্থঃ- হে আল্লাহ আমি উমরাহ
পালনের নিয়ত করছি। তা আমার জন্য
সহজ করে দিন এবং কবুল করে নিন।
(৪) মসজিদে হারামে প্রবেশ
করে এই দোয়া পড়ুনঃ
• আল্লাহুম্মাগ
ফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবোয়াবা রাহ্মাতিকা।
অর্থঃ- হে আল্লাহ,আমার সকল গুনাহ
মাফ করুন, এবং আমার জন্য আপনার
রহমতের দরওয়াজা সমুহ খুলে দিন।
(৫) তওয়াফ শুরুর পুর্বে এই
দোয়া পড়ুনঃ (কালরেখারউপরদাঁড়িয়ে)
• আল্লাহুম্মা ইন্নি উরীদু
তাওয়াফা বাইতিকাল
হারামী ছব’আতা আশোয়াতিনলিল্লহি তা’য়ালা ফাইছছিরহুলী ওয়া তাকাব্বালহু
মিন্নী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ আমি তুমার
বায়তুল হারামকে সাত
চক্ষরে তোয়াফ করার
ইচ্ছা করছি একমাত্র তুমার
সন্তুষ্টি লাভের জন্য। আমার জন্য
তা সহজ করে দিন।এবং কবুল
করে নিন।
(৬) হাজরে আছওয়াদেচুমু দেয়ার সময়
পড়ুনঃ (৮চক্ষরে আঁট বার)
• আল্লাহু আকবর
লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াছছালাতু
ওয়াছছালামু আলা রাসুলিল্লাহি।
(৭)হাজরে আছোয়াদও
রুকনেইয়ামানীর
মধ্যখানেরদোয়া সমূহঃ

সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদুলিল্লাহি ওয়া লাইলাহা,
ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু
আকবার,ওয়ালাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহি।
লাইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু
মিনাজ যোয়ালিমীন।
অর্থঃ- আল্লাহ পবিত্র এবং সকল
প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আল্লাহ
ছাড়া ইবাদতের কেউ নেই। আল্লাহ
তালা সব ছেয়ে মহান। ভাল কাজ
করার শক্তি এবং মন্দ কাজ
থেকে বেচে থাকার সামর্থ্য
আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়।
হে আল্লাহ, তুমি ছাড়া কোন মাবুদ
নাই, তুমি পবিত্র, নিশ্চয়
আমি অত্যাচারকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
• আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন,
তুহিব্বুল আফউয়া, ফা’ফু আন্নী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ, নিশ্চয়
আপনি অত্যান্ত ক্ষমাশীল,
ক্ষমা করাকে পছন্দ
কর,আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
• রাব্বিগ ফিরলী ওয়াতুব
আলাইয়্যা ইন্নাকা আন্তাত
তাওয়াবুর রাহীম।
অর্থঃ- হে আমার প্রতিপালক,
আপনি আমাকে ক্ষমা করুন,
এবং আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয়
আপনি তওবা গ্রহনকারি দয়ালু।
• আছতাগ ফিরুল্লাহাল
লাজি লাইলাহা ইল্লাহুয়াল
হাইয়ুল কাইয়ুমু ওয়াতুবু ইলাইহি,
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা রিজাকা ওয়াল
জান্নাতা ওয়া আউজু বিকা মিন
গাজাবিকা ওয়ান্নারি।
অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি তুমার
কাছে তুমার সন্তুষ্টি ও জান্নাত
চাচ্ছি। এবং তুমার অসন্তুষ্টি ও
দোজখ থেকে পানাহ চাচ্ছি।

রাব্বানা আতিনা ফিদ্দোনিয়া হাসানা,
ওয়াফিল আখিরাতি হাসানা,
ওয়াকিনা আজাবান্নারি।
ওয়া আদখিলনাল জান্নাতা মা’আল
আব্রারি। ইয়া আজিজু
ইয়া গাফফারু, ইয়া রাব্বাল
আলামীন।
অর্থঃ- হে আল্লাহ
আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতেও
কল্যাণ দান করুন ও পরকালের কল্যাণ
দান করুন।
এবং আমাদেরকে জাহান্নামের
আযাব থেকে রক্ষা করুন। পুণ্যবানদের
সাথে আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ
করান। হে মহা সম্মানী,
হে মহা ক্ষমাকারি, হে সমস্ত
জাহানের পালনকর্তা।
(৮) জমজমের পানি পান করার সময় এই
দোয়া পড়বেনঃ

আল্লাহুম্মা ইন্নী আসাআলুকা ইলমান
নাফিয়া, ওয়া রিজকান ওয়াসিয়া,
ওয়া আমালান সোয়ালিহা,
ওয়া শিফাআম মিন কুল্লি দায়িন।
হে আল্লাহ, আমি তুমার
কাছে উপকারী জ্ঞান, প্রশস্ত
রিজিক, নেক আমল, এবং প্রত্যেক রুগ
থেকে আরুগ্যতা চাচ্ছি।
(৯) সাফা পাহাড় আরোহণ
কালে এই দোয়া পড়বেনঃ
• আব্দাউ বিমা বাদাআল্লাহু
তাআলা বিহি ইন্নাস সাফা ওয়াল
মারোয়াতা মিন শাআইরিল্লাহি।
অর্থঃ- আমি এই জায়গা থেকে সাঈ
আরম্ভ করছি, যার উল্ল্যেখ আল্লাহ
তালা প্রথমে করেছেন, নিশ্চয়
সাফা এবং মারওয়া আল্লাহ
তালার নিদর্শন সমূহের অন্ত্ররভুক্ত।
(১০) সাফা-মারোয়ার সাঈর
নিয়তঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদুছ
সাঈয়া বাইনাসসাফা ওয়াল
মারোয়াতি সাব’আতা আসোয়াতিন
লিল্লাহি তালা ফাইছছিরহু
লী ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি সাফা ও
মারোয়ার মধ্যখানে সাত
চক্ষরে সাঈ করার নিয়ত
করছি একমাত্র তুমার
সন্তুষ্টি লাভের জন্য, আমার জন্য
তা সহজ করে দিন এবং কবুল
করে নিন।
(১১) সাঈ এর সময় সবুজ দুটি স্তম্বের
মধ্যখানে এই দূয়া পড়বেনঃ
• রাব্বিগ ফির ওয়ারহাম
ইন্নকা আন্তাল আআজ্জুল আকরাম।
অর্থঃ- হে প্রতিপালক,
আপনি আমাকে ক্ষমা করুন ও দয়া করুন।
নিশ্চয় আপনি সকলের উপর ক্ষমতাশীল
ও সবচেয়ে বেশী সম্মানী।
(১২) আরাফার মাঠে, মীনায়,
মুযদালিফায় ও চলতে ফিরতে সব সময়
এই তাছবিহ গুলো পড়বেনঃ
• আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবার
লাইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার
ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
**সুবহানাল্লাহ, **আলহামদুলিল্লাহ,
**লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, **আল্লাহু
আকবার।
**আস্তাফিরুল্লাহাল
লাজি লাইলাহা ইল্লা হুয়াল
হাইয়ুল কাইকুমু ওয়াতুবু ইলাইহি।
এক নজরে হজ্জ ও উমরাহের
কয়েকটি পরিভাষা এবং বিশেষ
স্থান সমূহঃ
১) ইহরামঃ এর অর্থ হারাম করা। হজ্জ
ও উমরাহের নিয়ত
করে তল্বিয়া পাঠ করার পর কতিপয়
হালাল বস্তু তাদের উপর হারাম
হয়ে যায়। এজন্য তাকে ইহ্রাম বলে।
২) তলবিয়াঃ লাব্বাইক
আল্লাহুম্মা লাব্বাইক——-পুরোটার
নাম তলবিয়া।
৩) মীকাতঃ যেখান থেকে হজ্জ ও
উমরার ইহরাম বাঁধা হয়।
৪) হারামঃ মক্কা মদিনার
চারদিকের বেশ দূর পর্যন্ত
এলাকাকে হারাম বলা হয়। এর
ভিতরে স্থলজ প্রাণী শিকার করা,
বৃক্ষ কাটা, পশুকে ঘাস
খাওয়ানো হারাম।
৫) তোয়াফঃ বিশেষ
পদ্ধতিতে কাবা ঘরের
চারিদিকে প্রদক্ষিন করা।
৬) রমলঃ তওয়াফের প্রথম তিন চক্কর
বীরের ন্যায় সাহসের সাথে বুক
ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে চলা।
৭) ইজতেবাঃ ইহরামের চাদর ডান
বগলের নিচের দিক
থেকে পেছিয়ে এনে বাম কাঁধের
উপর রাখা। তবে নামাযের সময় কাঁধ
ঢেকে নামায পড়তে হয়।
8) জামারাতঃ মীনায় অবস্থিত
তিনটি স্তম্ব যেগুলোকে পরুক্ষ
ভাবে শয়তান বলা হয়।
১০) রমীঃ কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
১১)
হাজারে আসোয়াদঃ কাবা শরীফের
পর্ব দক্ষিন কোনে স্থাপিত
কালো পাথর।
১২)
মাকামে ইব্রাহীমঃ যেখানে একটি বেহেস্তী পাথর
রাখা আছে, যে পাথরের উপর
দাঁড়িয়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ)
ক্বাবা ঘর মেরামত করেছিলেন।
১৩) মাথাফঃ ক্বাবা ঘরের
চতুর্দিকের খোলা জায়গা,
যেখানে তোয়াফ করা হয়।
১৪) উকুফে আরাফাঃ ৯ই জিলহজ্জ
আরাফার মাঠে আবস্থান করা।
১৫) জাবালে রহমতঃ আরাফার
একটি পাহাড়
যেখানে দাড়িয়ে হুজুর (সঃ)
বিদায় হজ্জের ভাষণ দিয়েছিলেন।
১৬) মসজিদে খায়েফঃ মীনায়
অবস্থিত মসজিদ যেখানে ৭০ জন
নবী নামায আদায় করেছিলেন।
১৭) মসজিদে নামিরাঃ আরাফার
মসজিদ।
১৮) মসজিদে তানঈম
বা মসজিদে আয়িশাঃ মক্কার
কাছে অবস্থিত মসজিদ
যেটাকে উমরা মসজিদও বলা হয়।
যেখান থেকে উমরাহের ইহরাম
বাধা হয়।
১৯) জান্নাতুল
মুওয়াল্লাহঃ মক্কা শরীফের
নির্দৃস্ট বতকত্ময় কবরস্থান।
২০) জান্নাতুল
বাকীঃ মদীনা শরীফের নির্দৃস্ট
বরকত্ময় কবরস্থান।
২১)
মসজিদে কুবাঃ মদিনা শরীফে অবস্থিত
ইসলামের প্রথম মসজিদ।
২২)
মসজিদে কিবলাতাইনঃ মদিনা শরীফের
যে মসজিদে নবী করীম (সঃ)
মসজিদে আকসার দিকে মুখ
করে যোহরের নামায পড়া অবস্থায়
কাবা শরীফের প্রতি মুখ
ফিরিয়েছিলেন।
২৩)
মসজিদে ঘামামাহঃ মদিনা শরীফের
দক্ষিন পশ্চিম কোনে অবস্থিত
মসজিদ যে খানে রাসুল (সঃ) ঈদের
নামায পড়তেন। ইহরাম অবস্থায়
যা করা নিষেধ
(১) চুলকাঁটা,
কামানো বা ছিঁড়ে ফেলা।
(২) নখ কাটা বা ছিঁড়ে ফেলা।
(৩) মাথায় ও দাড়িতে এমন
ভাবে হাত বোলানো, যাতে চুল
ছিঁড়ে যায় বা পড়ে যায়।
(৪) গোসলে বা কাপড় কাঁচায়
সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করা।
(৫) কোন প্রকার সুগন্ধি তৈল, আতর,
ক্রীম ইত্যাদি ব্যাবহার করা।
(৬) গুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায় ইচ্ছাকৃত
বা অনিচ্ছায় মাথা ও
চেহারা ঢাকা।
(৭) এমন জুতা পরিধান
করা যাতে পায়ের মধ্যবর্তী উঁচু হাড়
ঢাকা পড়ে যায়। এজন্য দুই
ফিতা বিশিষ্ট স্যান্ডেল পরিধান
করা।
অবশেষে দুয়া করি আল্লাহ পাক
যাদের হজ্জে যাওয়ার তৌফিক
দিয়েছেন তাদের
সবাইকে হজ্জে মাব্রুর দান করুন।
এবং আমরা যারা যেতে পারিনাই
আমাদেরকে যেন এই হারামাইন
সারিফাইন যিয়ারতের তৌফিক
দেন। আমিন

Home About-us Privacy Policy Contact-us Services
Copyright © 2014 kite | All Rights Reserved. Design By Templateclue - Published By Gooyaabi Templates