ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) / মুক্তপেশা বলতে বোঝায় নিজের যোগ্যতা কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে কাজ করা ( আবিধানিক ), আর কাজ গুলো বেশিরভাগ সময়েই বিদেশি ক্লাইন্ট দিয়েথাকে তাই আমরা আউটসোর্সিং নামেও অবহিত করেথাকি । স্বাধীন ভাবে মার্কেটপ্লেসএ থেকে কাজ নিয়ে তা পারিশ্রমিকের বিমিময়ে করে দেওয়া অথবা নিজের সৃষ্টিশীলতা কাজেলাগিয়ে বিভিন্ন প্রডাক্ট( App, Theme, Plugin, Design etc. ) তৈরি করে তা মার্কেটপ্লেসএ বিক্রি করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে । যদিও বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যাপক আপপ্রচারণার দৌলতে ও আমাদের দেশের বেশিভাগ মানুষের টেকনোলজির ব্যাপারে যথাযত ধারনা না থাকায় অনেকে ক্লিক-বাজীকেই ফ্রিল্যান্সিং মনে করে ভুল করেন।
অনেকেরই ধারনা ফ্রিল্যান্সিং মানেই অনেক টাকা, হ্যাঁ সত্যি অনেক টাকা! কিন্ত তা অবশ্যই অনেক পরিশ্রমের ফল। ফ্রিল্যান্সিং কোন আঙুলফুলে কলা গাছ হবার মাধ্যম নয়। হ্যাঁ আপনি অফিসে যেভাবে কাজ করেন, এখানেও ঠিক তেমনি কাজ করতে হবে শুধু পার্থক্য হচ্ছে কাজটা আপনি বাসায় বসেই করতে পারবেন আর যতখানি কাজ করবেন ঠিক ততখানি পারিশ্রমিক পাবেন আর কাজের মান হতেহবে আন্তর্জাতিকমানের।
শুরু করার আগে আপনাকে বুঝতে হবে আপনি এর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত কিনা / যে বিষয় গুলো আপনাকে রপ্ত করতে হবে, সহজ বোঝার জন্য নিচে কিছু গুরুত্তপূর্ণ পয়েন্ট দিলামঃ
- প্রবল ধৈয্য ধারন করার ক্ষমতা থাকতে হবে, না হলে অনেকের মত শুরুতেই ব্যর্থা হতে হবে ।
- যেহেতু বেশিরভাগ সময়েই বিদেশি ক্লাইন্টএর কাজ করতে হবে তাই আপ্নাকে অবশই যোগাযোগের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ (ইংলিশ) এ ভাল দক্ষতা থাকতে হবে ।
- কাজ করার সাথে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার প্রবল মানসিকতা থাকতে হবে, যে বিষয় নিয়ে কাজ করবেন ঐ বিষয়ে নতুন যা কিছু আপডেট আসবে আপনাকে সবই রপ্ত করতে হবে। নয়ত না শেখার মানশিকতা কোন এক সময় আপনার ফ্রিল্যান্সিং কেরিয়ারের জন্য হুমকি হয়ে দারাবে ।
- শুধু ইংলিশ এ ভাল দক্ষতা থাকলেই হবে না ভাল কজের সাথে সাথে তুখোড় কমিউনিকেশন দক্ষতা প্রয়জন হবে। শুধু এর কারনেই অনেকে কাজ করে শ্বাস ফেলার সময়টুকু পান না আর অনেকে ভাল কাজ জানলেও কাজ পান না / ক্লাইন্ট ধরে রাখতে পারেন না ।
- বাস্তবতা উপলব্ধি করুন, ফ্রিল্যান্সিং মানেই পরিশ্রম ছাড়াই লাখ লাখ টাকা এই ধারনা পরিহার করতে হবে ।
- শুরুর আগেই ভেবেনিন কতটুকু সময় দিতে পারবেন, তাই পর্যাপ্ত সময় না থাকলে আপাতত কাজ শুরু নাকরাই ভাল। আপাতত যা সময়পান তা টুকিটাকি শেখার কাজে লাগান।
- ভাল ভাবে কাজ শিখতে আপনাকে মিনিমাম ২-৩ বছর হাতে নিয়ে শুরু করতে হবে, হয়ত এর মদ্ধে আপনি টুকি-টাকি কাজ ও করতে পারবেন অবশ্যই তা আপনার শেখার গতির উপর নির্ভর করবে সময় হলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনি ছোট-খাট কাজের জন্য প্রস্তুত কিনা।
বর্তমানে মার্কেটপ্লেস এ অনেক ধরনের কাজ আছে একটু গুগল করলেই পাবেন, নিচে কিছু কাজের লিস্ট দিলামঃ
- Application Development
- Web Design and Development
- Graphic Design and video editing
- Data Entry
- Business Services
- Cms Development
- Lead Generation
- Transcribing
- Article Writing and Web Content
- SEO
- Customer Service
- Administrative Support
- Networking & Information Systems
সবকিছু বুঝে শুনে আপনার যদি মনেহয় আপনি সব দিক থেকে ঠিক আছেন তবেই শেখার জন্য যে কোনো একটি বিষয় ঠিক করুন কারন অনেক গুলো বিষয় একসাথে শেখার চাইতে একটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলে তুলনামুলক বেশি দক্ষ হয়েউঠবেন আর মার্কেটএ শুধুমাত্র দক্ষরাই টিকে থাকে । আজকাল উপরের বেশিরভাগ বিষয়েই বাংলায় টিউটেরিয়াল পাওয়া যায় তাই শিখতে ততটা ঝামেলা পোহাতে হবে না যতটা আগে হত ইংলিশ টিউটেরিয়াল দিয়ে শিখতে।
এখন বলতে পারেন, "ভাই কথা তো অনেক বললেন, আসল কথা ( ইনকাম ) বলেন !! "
ইনকাম নিয়ে মনে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে যেমন,
- টাকা ইনকাম করতে পারবতো?
- টাকা মার যাওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা?
- কীভাবে টাকা হাতে পাব?
কেন পারবেন না ? ঠিকঠাক কাজ জানলে কাজের অভাব হবেনা আর কাজ থাকলে ইনকম নিয়ে ভাবতে হবেনা। আর টাকা মার যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, সঠিক মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ নিলে টাকা আপনি ১০০% পাবেন আর তা আপনার ব্যাংক এর মাধ্যমেই তুলতে মারবে!! খুব সহজ তাই না? আরও আছে পেওনিয়ার মাষ্টার কার্ড, প্রায় সব মার্কেটই এই কার্ড সাপোর্ট করে জার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই টাকা তুলতে পারবেন যে কোন Master Card সাপোর্টেড ATM থেকে পৃথিবীর যে কোন দেশে।এছাড়া আরও অনেক পেমেন্ট মেথড আছেঃ
- PayPal
- Skrill
- Payza
তবে বর্তমানে আমাদের দেশে পেওনিয়ার, Skrill, Payza সাপোর্ট করে, যদিও PayPal সব থেকে জনপ্রিয় তারপরও বিভিন্ন জটিলতার কারনে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
সবশেষে বলতে পারি, কোন সন্দেহ নেই যে পৃথিবীর প্রথম সারির সন্মানজনক পেশা গুলর একটি ফ্রিল্যান্সিং আর স্বাধীন-মনা যে কার প্রথম পছন্দ। যেহেতু এটি একটি আন্তর্জাতিক পেশা তাই আপনার কাজের মান ও নিজেকে সেরকম করে গড়ে তুলতে পারলেই সফলতার চরম শিখরে পৌছাতে পারবেন।